শীত শুরু না হতেই বৃষ্টি নেমে গেল। দু’দিন ধরে অঝোর বৃষ্টিতে জল জমে গেল রাস্তায়। জমির দশা দেখে মাথা খারাপ। তন্ময়ের। এখন কি বৃষ্টি হওয়া উচিত? গনা বলেছে খাদি বর্ষে মাঘের শেষ/ধন্য রাজা পুণ্য দেশ। এটা কি মাঘের শেষ? কত তারিখ আজ বাংলার? ধুর ছাই, এই ব্যানার তারিখগুলো কোথায় থাকে যে… খবরের কাগজে পাওয়া যাবে। হম, এই তো। কাগজ খুঁজে বের করে তারিখ দেখে চমকে উঠেছে তন্ময়। এটা তো দোসরা ফালগুণ। তাহলে… খনা কী বলেছে… ফরফর করে পাতা উলটে চলে তন্ময়। এই যে, খনা বলেছে, ‘যদি বর্ষে আগনে/রাজা যায় মাগনে…! আগন মানে। অগ্রহায়ণ। চটি বইটা মেলা থেকে কিনে এনেছে তন্ময়। হাতের কাছে রাখে সবসময়। এটা তো অয়াগ মাস। অয়াগে বর্ষে যদি,। তাহলে ভিক্ষে করে খেতে হবে। ধান হবেনা জমিতে। অথচ ধান না হলে তন্ময় যে মরে যাবে! পার্লার ঘুরে এসে আয়নার কাচে নিজের প্রতিবিম্বের দিকে মুগ্ধ চোখে তাকিয়ে ছিল কুহেলি। তন্ময় গুকে দেখল। কিন্তু কুহেলি এখন তন্ময়ের মনে ঢুকতে পারবে না। নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত ও। তবু কুহেলিকে না বলে পারে কী করে তন্ময়! শুর অবস্থা দেখে কুহেলি গজদন্ত দেখিয়ে হেসে সারা-সে কি গো? যান না হলে ভিক্ষে করবো তুমি? তাহলে কলেজে কেমিস্ট্রি পড়াবে কে? কুহেলির হাসি যানের ভেতরে লুকিয়ে থাকা ধবধবে সাদা শস্যের মত দুলতে থাকে। মুগ্ধ হয়ে কুহেলির হাসির দিকে তাকিয়ে থাকে তন্ময়। সবুজ শাড়িতে কুহেলিকে ধান গাছের মত দেখাচ্ছে। হাদিকে হেলে দুলে উঠছে বলে কুহেলি একটা ধান গাছ এখন। দুলছে ধানের খেত। তন্ময়ের বান খেত!